স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশের বদলে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের জামায়াত-শিবিরকে মোকাবেলার আহ্বান করে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি সেলিম বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর জামায়াত-শিবিরকে মোকাবেলায় পুলিশকে নির্দেশ না দিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাদের আহ্বান করছেন।”
“অথচ, জামায়াত-শিবির রাষ্ট্রের শত্রু, তাদের প্রতিরোধের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এর মধ্য দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন,” বলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা যুদ্ধাপরাধের মামলায় আটক নেতাদের মুক্তি দাবিতে নভেম্বরের শুরু থেকে পুলিশের ওপর চড়াও হয়।সারা দেশে গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের ওপর হামলাসহ চোরাগোপ্তা হামলা চালায় তারা। কারওয়ানবাজারে আইনমন্ত্রীর গাড়িবহরও তাদের হামলার মুখে পড়ে।
ওই সহিংসতা শুরুর পর গত ৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে এক সমাবেশে জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করতে যুবলীগ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
“যেখানেই জামায়াত-শিবির দেখবেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির অপতৎপরতা দেখবেন সেখানেই তাদের প্রতিহত করবেন,” বলেন তিনি।
পরে ওই সমাবেশ থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ আহ্বানের কঠোর সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “অফিসে ঢুকে জামায়াত খুঁজে পান না, আর এখন বলছেন, জনগণকে জামায়াত-শিবির খুঁজতে হবে। যুবলীগ কেন তাদের খুঁজবে। এটা তাদের কাজ নয়।”
জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ, জামায়াত-শিবিরসহ সব সাম্প্রদায়িক দল এবং রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের দ্রুত বিচার ও শাস্তি প্রদান এবং আশুলিয়ার তাজরিন গার্মেন্টসে অগ্নিকান্ডে শ্রমিক নিহতের জন্য কারখানার মালিক ও কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সিপিবি ও বাসদ এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ে কর্মসূচি
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি প্রতিহত করতে রোববার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(বাসদ)।
সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “এ সরকারের মেয়াদে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে না বলে তারা বলেছিল। তারা সে কথা না রাখলে, তাদের মুনাফেক ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী হিসেবে সবাই চিনবে।”
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ভর্তুকি কমিয়ে আনার জন্য জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো প্রয়োজন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া দুইজনেই আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের দালাল। তবে খালেদা জিয়া জামায়াতের সঙ্গে জোট করেছেন বলে তিনি বড় দালাল।”
“সরকারের সঙ্গে লুটপাটের ভাগবাটোয়ারার জন্য আন্দোলন করছি না।মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের আন্দোলন।”
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর আহমেদ, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য দেন।