সংসদীয় কমিটির তোপের মুখে বিমান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন

সংসদীয় কমিটির তোপের মুখে বিমান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন

নিজেদেরকে স্বাধীন দাবি করে পার পাওয়ার চেষ্টা করলেও সংসদীয় কমিটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিমানকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

কমিটি পর্যবেক্ষণে বলেছে, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শর্ত পূরণ করছে না বিমান। পুঁজিবাজারে কমপক্ষে ৫১ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার বিধানও মানা হচ্ছে না। সরকারের শতভাগ আর্থিক সহায়তায় চলছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৭৪তম বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি এ বি এম গোলাম মোস্তফা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, খান টিপু সুলতান, বীরেন শিকদার, এস কে আবু বাকের এবং মইন উদ্দীন খান বাদল বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ১৪-১৮ জুন লিজ নেওয়া ৭৪৭ উড়োজাহাজের ফ্লাইট বন্ধের ঘটনা তদন্তে গঠিত উপ-কমিটির রিপোর্ট নিয়ে এসময় আলোচনা হয়। ওই রিপোর্টে বিমান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দীন আহমেদকে ফ্লাইট বাতিলের জন্য দায়ী করা হয়। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় বিমানের ৪৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি ও যাত্রী সেবার সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার জন্য বিমান চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করা হয়।

সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার সময় বিমানের চেয়ারম্যান দাবি করেন তদন্ত কমিটির কোনো বৈঠকের নোটিশ তার কাছে পৌঁছায়নি। তাছাড়া বিমান একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। বিমানের যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার এর পরিচালনা পর্ষদের।

এসময় কমিটির সদস্যরা বিমান চেয়ারম্যানের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন।

এ বিষয়ে কমিটির সদস্য টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, “কমিটির সদস্যরা বিমান চেয়ারম্যানের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন।”

তিনি বলেন, “বিমান পাবলিক লিটিমেড কোম্পানি হলেও সতন্ত্র কোম্পানির শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এখনও এর শতভাগ আর্থিক সহায়তা সরকার দেয়। তাছাড়া ৫১ শতাংশ শেয়ার এখনো পুঁজিবাজারে ছাড়া হয়নি।”

ফজলে রাব্বি বলেন, “কমিটির সদস্যরা বলেছেন, বিমানকে অবশ্যই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।”

এদিকে, সংসদীয় তদন্ত কমিটির বৈঠকের বিষয়ে বিমান চেয়ারম্যানের বক্তব্য সম্পর্কে কমিটির প্রভাবশালী সদস্য মইন উদ্দীন খান বাদল বাংলানিউজকে বলেন, “উনি (জামাল উদ্দীন) কোনো বৈঠকে আসেননি। যারা আসেন না সবসময়ই তাদের অজুহাত থাকে নোটিশ পাননি।”

বিমান চেয়ারম্যানের লিখিত বক্তব্য যাচাই করে চূড়ান্ত সুপারিশ দেওয়া জন্য উপ-কমিটিকে দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান মইর উদ্দীন খান। এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য খান টিপু সুলতানকে উপ-কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে কমিটির সদস্যরা উপ-কমিটির বৈঠকের নোটিশের বিষয়ে জানতে চান। এ সময় মন্ত্রণালয় জানায়, সংসদ সচিবালয়ের পাঠানো নোটিশ তারা বিমান কার্যালয়ে ফ্যাক্সযোগে পাঠানো হয়েছিলো।

উল্লেখ্য, গত ২৪ ডিসেম্বর স্থায়ী কমিটির উপ-কমিটির প্রতিবদেন নিয়ে ২৭ ডিসেম্বর আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। এই বৈঠকে উপ-কমিটির প্রতিবেদনের জবাবে বিমানের ভারপ্রাপ্ত এমডি ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদনও জমা দেওয়া হয়। ওই বৈঠকে জামাল উদ্দীন আহমেদ উপস্থিত থাকলেও উপ-কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

২০১০ সালের ৪ জুন ওই উপ-কমিটি গঠন করা হয়। বীরেন শিকদারকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ উপ-কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন এস কে আবু বাকের, বজলুল হক হারুন ও আমিনা আহমেদ।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে খান টিপু সুলতানকে এ কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।

 

অন্যান্য অর্থ বাণিজ্য বাংলাদেশ শীর্ষ খবর