‘বিদ্যুতের উৎপাদন চার বছরে চাহিদা ছাড়াবে’

‘বিদ্যুতের উৎপাদন চার বছরে চাহিদা ছাড়াবে’

উৎপাদন কম হওয়ায় এখন লোডশেডিং দিয়ে কিংবা চাহিদা সীমাবদ্ধ রেখে পরিস্থিতি শামাল দেয়া হলেও আগামী চার বছর পর বিদ্যুতের উৎপাদন চাহিদা ছাড়াবে বলে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বুধবার বিদ্যুৎ ভবনে সরকারি মালিকানায় ৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এই আশার কথা শোনান।

মুহিত বলেন. “আমারা ২০২১ সালে মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে চাই। লক্ষ্য পূরণের জন্য আমাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ যথেষ্ট থাকতে হবে।

“আমি ২০১৫ এর কথা বলব না, তবে ২০১৬ সালের মধ্যে চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।”

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) হিসাবে, দেশে বিদ্যুতের দৈনিক গড়চাহিদা এখন ৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট (ডিমান্ড সাইজ ম্যানেজমেন্টসহ)।

শীতকালের কারণে সোমবার ৫ হাজার ১০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ছিল ৪ হাজার ৬১৬ মেগাওয়াট।

বিউবোর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ৬০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য চুক্তি হয়েছে, যার উৎপাদন ক্ষমতা ৮ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি।

এর মধ্যে রেন্টাল ৩টি, কুইক রেন্টাল ১৭টি, আইপিপি ১৯টি এবং সরকারি মালিকানাধীন ২১টি।

আগের সরকারের আমলে চুক্তি করা ২০টিসহ বর্তমান সরকারের আমলে উৎপাদন শুরু করেছে ৫১টি কেন্দ্র, যাদের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৩ হাজার ৫৯৫ মেগাওয়াট।

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা আরো বেশি থাকলেও জ্বালানি স্বল্পতার কারণে উৎপাদন হচ্ছে।

মুহিত বলেন, গত চার বছরে পরিশ্রমের ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই বিদ্যুতের জন্য প্রায় এক বিলিয়ন (একশ কোটি) ডলারের চুক্তি হচ্ছে।

সন্ধ্যায় মন্ত্রীর উপস্থিতিতে দেশের অন্যতম বড় ৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য দুটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিউবো।

বিবিয়ানা-৩ কম্বাইন্ড সাইকেল কেন্দ্রটি নির্মাণ করবে জাপানের মারুবেনি করপোরেশন এবং কোরিয়ার হুন্ডাই ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।

চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ের গ্যাসভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সিম্পল সাইকেলের (২৭৩ মেগাওয়াট) উৎপাদন শুরু হবে ২২ মাসের মধ্যে এবং কম্বাইন্ড সাইকেলের (৩৯৯ দশমিক ২৮ মেগাওয়াট) উৎপাদন শুরু হবে ৩০ মাসের মধ্যে।

প্রকল্প ব্যয়ের ১৫ শতাংশ অর্থায়ন করবে সরকার। বাকি অর্থ ঋণ হিসাবে দেবে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এবং অন্যান্য সংস্থা।

তিন দশমিক ২৮ শতাংশ সুদে পাওয়া এ অর্থ ১০ বছরে সরকারকে পরিশোধ করতে হবে। সরকারি খাতে ইপিসি (ইন্জিনিয়ারিং, কনস্ট্রাকশন, প্রকিউরমেন্ট)-এর আওতায় এটিই প্রথম প্রকল্প।

এ প্রকল্পের বৈশিষ্ট হল- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানই এর অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান জোগাড় করবে।

এর আগে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বেসরকারি খাতে ইপিসির আওতায় বাস্তবায়িত হয়েছে।

অথর্মন্ত্রী বলেন, “আমাদের বিভিন্ন খাতে বিদেশি অর্থ সহায়তা বাড়ছে। বর্তমানে বিদেশি অর্থ সহায়তার পরিমাণ জিডিপির ২ শতাংশ। এটা ৩ শতাংশ হবে বলে আশা করছি।”

তবে সহায়তার পাশাপাশি সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ দেশে আরো বাড়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।

অন্যান্য অর্থ বাণিজ্য বাংলাদেশ শীর্ষ খবর