বিরোধী দলের অবরোধের মধ্যে পুরান ঢাকায় ছাত্রলীগের হামলায় দরজি দোকানি বিশ্বজিত দাস নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও তার দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আনন্দ মিছিলে ‘হামলার’ পর সংঘর্ষ হয়েছে, এর দায় আওয়ামী লীগের নয়।
রোববার ১৮ দলের রাজপথ অবরোধের মধ্যে পুরান ঢাকার আদালতপাড়ায় পিটুনি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন বিশ্বজিত, তার ওপর হামলার যে ছবি বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে ছাত্রলীগের কয়েকজনকে দেখা গেছে।
ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সন্ধ্যায় সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে জরুরি বর্ধিত সভার পর সংবাদ সম্মেলনে এলে বিশ্বজিতের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন হানিফ।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে আওয়ামী লীগ নেতার কাছে প্রশ্ন করা হয়- “বিরোধী দলের অবরোধে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সহযোগী সংগঠনগুলোকে রাস্তায় দেখা গেছে। ভিক্টোরিয়া পার্কে…।”
এই পর্যায়ে প্রশ্নকর্তা সাংবাদিককে থামিয়ে হানিফ বলেন, “পুরো বিষয়টি বুঝতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ জেতায় আমরা আনন্দ মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছিলাম। অনেক জায়গায় বিরোধী দল আনন্দ মিছিলে হামলা করেছে। আনন্দ মিছিলে বোমাবাজি হয়েছে। এরপর, সংঘর্ষ হয়েছে।
“এর দায় আওয়ামী লীগের ওপর আসতে পারে না।”
এরপর হানিফ উঠে চলে যেতে থাকলে সাংবাদিকরা জানতে চান, বিশ্বজিতের দায়-দায়িত্ব কী আওয়ামী লীগ নিচ্ছে না।
হানিফ এর কোনো জবাব না দিয়েই সংবাদ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন।
অবরোধের সমর্থনে রোববার সকালে বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা ঢাকার জজ কোর্টের ভেতরে মিছিল শুরু করলে জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীরা পাল্টা মিছিল নিয়ে ওই এলাকায় চক্কর দিতে থাকে।
এক পর্যায়ে ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে অবরোধকারী ও বিরোধীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয় এবং কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এর মধ্যেই পিটুনি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন বিশ্বজিত, যিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
স্বজনরা জানান, শাঁখারী বাজারে নিজের দোকানে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হন বিশ্বজিত। হামলাস্থল থেকে তার দোকান ছিল মাত্র ৫০ গজ দূরে।