আমীনাবাজারে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বিএনপির সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আলম। অবরোধের সকাল থেকে ওই এলাকা দখলে রাখার পর বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ একদিকে আওয়ামী লীগ ও অপরদিকে পুলিশের আক্রমণের মুখে বিএনপি নেতাকর্মীরা পিছু হটার সময় পুলিশের শটগানের গুলি তার শরীরে বিদ্ধ হয়।
এর আগে কমে গিয়েও ফের বেড়ে যায় গাবতলীর সংঘর্ষ। অবরোধকারীদের সামলাতে সকাল সোয়া দশটার দিকে এখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। একের পর এক টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছুঁড়ে অবরোধকারীদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা চালায় পুলিশ।
বেলা সোয়া ১১টার দিকে মিরপুর বিভাগের পুলিশের এডিসি জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, “গাবতলীর সংঘর্ষ মোকাবিলায় পুলিশ প্রসংশনীয় ভূমিকা রেখেছে। আমাদের তৎপরতা সন্তোষজনক।”
তবে এরপরপরই ফের সংঘর্ষ বাড়তে শুরু করে। আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা দোকান ভাঙচুর ও বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করলে বিএনপি ক্যাডাররাও আওয়ামী লীগের মিছিল লক্ষ্য করে পাল্টা ককটেল ছুঁড়তে থাকে।
ফলে পরিস্থিতির ওপর ফের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে পুলিশ।
এর আগে অবরোধকারী ও সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গাবতলী। সংঘর্ষ থামাতে অন্তত ৪০ রাউন্ড টিয়ার শেল ছোঁড়ে পুলিশ। আরো ছোঁড়ে অসংখ্য শটগানের গুলি।
আর পুলিশের এমন মারমুখী অবস্থানের সুযোগ নিয়ে পুরো গাবতলী এলাকা থেকে অবরোধকারীদের হটিয়ে দিতে শুরু করে সরকার সমর্থকরা।
এর আগে তারা অবরোধকারীদের আমিনবাজারের দিকে হটিয়ে দেয়। রোববার সকাল ছয়টায় অবরোধের শুরু থেকেই গাবতলী স্ট্যান্ড ও রাজপথ দখলে রাখা অবরোধকারীদের সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ আন্ডারপাসের ওপাশে আমিনবাজারের দিকে হটিয়ে দেয় সরকার সমর্থকরা।
এর ফলে আন্ডারপাসের আমিনবাজার প্রান্ত অবরোধকারী ও মাজার রোড প্রান্ত সরকার সমর্থদের দখলে চলে যায়। মাঝখানে অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষ নিবারকের কাজ করতে থাকে পুলিশ।
এর আগে সকাল ছ’টার পর থেকে মিছিল শুরু হয় গাবতলীতে। সরকারদলীয় ক্যাডারদের ধাওয়া দিয়ে অবরোধকারীরা সশস্ত্র মহড়া দিতে শুরু করে।
তবে টারমিনালের বাগবাড়ী এলাকায় সরকার দলীয় কর্মীরা অবস্থান করছে। এদিকে কোর্টবাড়ীসহ গাবতলীর বিভিন্ন স্থানে শিবির ও ছাত্রদলের ক্যাডাররা মহড়া দিচ্ছে।
তবে সকালে ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই অন্তত একডজন গাড়ি ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা। দু’একটি গাড়িতে আগুনও দেয় তারা। সকাল আটটার মধ্যে অন্তত ৫টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যেই লাঠি উঠে যায় সবার হাতে। বাসস্ট্যান্ড এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় অবরোধকারীরা। মূল সড়কের বেশ ক’টি স্থানে টায়ারও জ্বালায় তারা।
গাবতলীর কোর্টবাড়ী এলাকা থেকে টারমিনাল পর্যন্ত এলাকায় ছাত্রদল-শিবির কর্মীদের মহড়া দেখা যায়।
এ সময় অবরোধকারীরা এ এলাকার বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি এসএ খালেকের নামে স্লোগান দিতে থাকে।
পুলিশের সামনেই টোলারবাগে প্রায় ৮/১০টি চলন্ত গাড়ি ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা।