টেরেস্ট্রিয়াল কেবলের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হল বাংলাদেশ।
শনিবার রূপসী বাংলা হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) অপারেটর নভোকম এই ঘোষণা দেয়।
এখন সাবমেরিন কেবল সংযোগে সমস্যা হলেও তা টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় আগের মতো বড় প্রভাব ফেলবে না বলে নভোকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মঈনুল হক জানিয়েছেন।
তিনি জানান, টেরেস্ট্রিয়াল অপটিক্যাল ফাইবার লাইনের মাধ্যমে পাশের দেশ ভারতের টেলিযোগাযোগ কোম্পানির (টাটা ও এয়ারটেল) সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করল নভোকম।
আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশ একটিমাত্র সাবমেরিন কেবলের ওপর নির্ভরশীল, যার সঙ্গে সংযোগ প্রায়ই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর ফলে টেলিযোগাযোগসহ ওই কেবলনির্ভর অন্যান্য তথ্য-প্রযুক্তি খাত ক্ষতির মুখে পড়ে।
এখন বিকল্প হিসেবে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের সঙ্গে নভোকম সংযোগ স্থাপন করায় সাবমেরিন কেবল সংযোগে সমস্যা হলেও টেলিযোগাযোগে সমস্যা আগের মতো হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে মঈনুল হক বলেন, আইটিসি কাজ শুরুর মাধ্যমে ভবিষ্যতে ইন্টারনেট আরো সহজলভ্য হবে এবং গ্রাহকরাও সুবিধা পাবে।
তিনি জানান, গ্রাহকদের কাছে স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে নভোকম টেরেস্ট্রিয়াল কেবল সিস্টেম বাংলাদেশের সার্ভিস প্রভাইডারদের অন্যান্য আন্তজার্তিক কেবল সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
গত বছর ৩১ মার্চ আইটিসি লাইসেন্সিং গাইডলাইনের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে সরকার। লাইসেন্সিং গাইডলাইনের বিজ্ঞাপনে সর্বোচ্চ তিনটি লাইসেন্স দেয়ার কথা থাকলেও পরে ছয়টি লাইসেন্স দেয়া হয়।
এবছর ৫ জানুয়ারি দেশে প্রথমবারের মতো ছয়টি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) লাইসেন্স হস্তান্তর করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- নভোকম লিমিটেড, ওয়ান এশিয়া-এএইচএলজেভি, বিডি লিংক কমিউনিকেশন লিমিটেড, ম্যাংগো টেলিসার্ভিসেস লিমিটেড, সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড এবং ফাইবার অ্যাট হোম লিমিটেড।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক টেরিস্ট্রিয়াল কেবলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ওয়ান এশিয়া গত অগাস্টে টাকার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক টেরিস্ট্রিয়াল কেবলের সঙ্গে যুক্তও হলেও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে এখনো আসেনি।
টেরেস্ট্রিয়াল কেবল ভারতের মুম্বাই ও চেন্নাই ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে বিভিন্ন সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে।
বর্তমান সাবমেরিন কেবলের চেয়ে টেরিস্ট্রিয়াল কেবল তুলনামূলক সাশ্রয়ী হবে জানিয়ে মঈনুল বলেন, এর মাধ্যমে নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সাবমেরিন কেবল ছাড়াই সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে নভোকমের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা তানবির এহসানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।