দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবনমনের প্রেক্ষাপটে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, সরকারের ‘হস্তক্ষেপে’ ‘মনস্তাত্বিক চাপে’ রয়েছে দেশের দুর্নীতি দমন সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশের পর টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এই মত প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “সরকার দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান পালন করতে পারেনি, এর প্রভাব দুদকে পড়েছে। ফলে দুদক মনস্তাত্বিক চাপে রয়েছে। মনে হয়েছে, দুদকে সরকারের (ইচ্ছার) প্রতিফলন ঘটছে।”
সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর প্রভাব খাটাচ্ছে বলে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও অভিযোগ করে আসছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাাবেই কাজ করছে।
বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বুধবার সারা বিশ্বে একযোগে ‘দুর্নীতির ধারণাসূচক’ প্রকাশ করে। সকালে রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে টিআইবির পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশ সম্পর্কে বিস্তারিত জানান ইফতেখারুজ্জামান।
টিআই’র করা এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান গতবারের চেয়ে ২৪ ধাপ পিছিয়েছে। বৈশ্বিক গড় স্কোর ৪৩ এর বিপরীতে এবার বাংলাদেশের স্কোর ২৬।
এই অবস্থাকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে টিআইবি বলছে, পদ্মাসেতু প্রকল্প, রেলওয়ে কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজার, হল-মার্ক, ডেসটিনির মতো বহুল আলোচিত ঘটনার পাশাপাশি দুদকের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা হ্রাসের উদ্যোগও এজন্য দায়ী।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে টিআইবি দুদকের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে।
দুদক তাদের কর্মকাণ্ডে ‘আস্থা’ অর্জন করতে পারেনি মনে করলেও টিআইবি বলছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা অর্থ ফেরতের বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “দুদকের কার্যক্রম সম্পর্কে আস্থাহীনতা থাকতে পারে। তবে এটা যতই থাকুক না কেন, এটা (কোকোর টাকা ফেরত) পার্টিকুলার কেস। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।”
সিঙ্গাপুরের আদালতের রায়ের মাধ্যমেও কোকোর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের প্রমাণ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন টিআইবির এই কর্মকর্তা।