‘আইনি ব্যবস্থা দুই-এক দিনের মধ্যে’

‘আইনি ব্যবস্থা দুই-এক দিনের মধ্যে’

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান।

তবে অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন আবারো পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে বুধবার বিশ্ব ব্যাংক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কর্মকর্তাদের আলোচনার পর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজের প্রশংসা করে গেছেন বিশ্ব ব্যাংক পর্যবেক্ষক দলের প্রধান লুই গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো। বুধবার রাতেই তার ঢাকা ছাড়ার কথা।

মঙ্গলবার অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর বুধবারই মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার কথা জানিয়েছিল দুদক।

গোলাম রহমান মঙ্গলবার বলেছিলেন, অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে ‘ঘুষ’ লেনদেনের ‘ষড়যন্ত্রের’ জন্য বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে।

বুধবার বিশ্ব ব্যাংক পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে দু দফা বৈঠকে বসেন দুদক কর্মকর্তারা। বিশ্ব ব্যাংক প্যানেলের সদস্যরা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গেও আলোচনা করেন।

বিশ্ব ব্যাংক প্যানেলের সদস্যরা দুদক ছাড়ার পর গোলাম রহমান সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।

সুপারিশ অনুযায়ী চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দুই-এক দিনের মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নেব।”

অভিযুক্তের সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করে না বললেও তিনি মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, এই সংখ্যা ১০ এর কম।

প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের এই পর্যন্ত যা অনুসন্ধান হয়েছে, পুরো বিষয়টি নতুন করে পর্যালোচনার পর কমিশন এই বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করবে।”
এ ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখানে সিদ্ধান্ত নেবে দুদক। আমাদের আইনি কাঠামোর মধ্যে যদি তাদের কোনো পরামর্শ থাকে, তবে তা বিবেচনা করা হবে।”

এই প্রসঙ্গে গোলাম রহমান বলেন, এখানে অনেক বিষয় রয়েছে, যা এখন প্রকাশ করা সমীচীন হবে না।

বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা সফল কি না- জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “প্যানেল আমাদের কিছু বিষয় ব্যাখ্যা করেছে। আমরা কিছু বিষয় ব্যাখ্যা করেছি।”

এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় সেগুন বাগিচার কমিশন কার্যালয় ছাড়ার আগে ওকাম্পো সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “দুদক প্রশংসনীয় কাজ করছে। আমাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।”

“আর কিছু বলা নেই’ জানিয়ে ওকাম্পো বলেন, এখন তিনি বিমানবন্দর রওনা হচ্ছেন। তার সঙ্গে ছিলেন প্যানেলের অন্য দুই সদস্য টিমোথি টং ও রিচার্ড অল্ডারম্যান।

প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার বিষয়ে বুধবার দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকের ফাঁকে ওকাম্পো ও তার প্যানেলের সদস্যরা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গেও আলোচনা করেন।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এই প্যানেলের সদস্যদের সঙ্গে দুদকে গিয়েছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি অ্যালেন গোল্ডস্টেইনও।

ঘণ্টাখানেক পর তারা সবাই যান মিন্টো রোডে অর্থমন্ত্রীর বাড়িতে। সেখানে দুই ঘণ্টা আলোচনার পর পুনরায় দুদকে ফেরেন ওকাম্পোরা তিনজন, তবে ফেরেননি গোল্ডস্টেইন।

বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দুদক ছাড়ার সময় গোল্ডস্টেইন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এখনো আলোচনা করছেন তারা। আলোচনা শেষ হলে কিছু বলতে পারবেন।

অর্থমন্ত্রীর বাড়িতে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেই বিষয়ে মুখ খোলেননি কেউ। ওকাম্পো সাংবাদিকদের সব প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন।

ওই বৈঠকে থাকা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর কাছে বৈঠকের আলোচনা জানতে চাওয়া হলে ‘অর্থমন্ত্রী বলবেন’ বলে তিনিও সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।

মুহিত নিজে ‘নো কমেন্ট’ বলে সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেছেন।

অন্যান্য অর্থ বাণিজ্য বাংলাদেশ রাজনীতি শীর্ষ খবর