আগাম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। আগামী বছর অক্টোবরের পরই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দলীয় সাংসদদের উদ্দেশে এই ঘোষণা দেন। পরে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সাংসদ সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা।
বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুসারে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসাবে ২৫ অক্টোবরের পর যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে।
বৈঠক সূত্র জানায়, প্রায় এক ঘণ্টা চলা এই বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সূচনা বক্তব্য দেন। এই বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সময় খুব বেশি নেই। আগামী অক্টোবরেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। আপনারা এলাকায় যান।’
প্রধানমন্ত্রী সাংসদদের হুঁশিয়ার করে বলেন, তাঁর কাছে প্রত্যেক সাংসদ সম্পর্কে তথ্য আছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদন ছাড়াও একাধিক জরিপের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অনেক সাংসদের দূরত্ব রয়েছে। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে নিজ উদ্যোগে সমঝোতা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে তৃণমূলের ভোটের ভিত্তিতে। তৃণমূলে যাঁর জনপ্রিয়তা নেই, তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’
বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বিরোধী দলের দেওয়া কর্মসূচির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে বিরোধী দল আন্দোলনের যে কর্মসূচি দিয়েছে, তা দেশপ্রেমের পরিপন্থী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য এসব কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর কয়েকজন সাংসদ বক্তব্য দেন। এসব বক্তব্যে সাংসদেরা তাঁদের পক্ষ থেকে দেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ দ্রুত ছাড় করার দাবি জানান। নির্বাচনের আগেই যেন রাস্তাঘাট ঠিক করা হয়, সে দাবিও জানান তাঁরা। কয়েকজন সাংসদ আগামী গ্রীষ্মের আগে বিদ্যুত্-ব্যবস্থা উন্নয়নের পরামর্শ দেন। রাস্তাঘাট উন্নয়নে নতুন প্রকল্প না নিয়ে চলমান প্রকল্পগুলোই দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন কয়েকজন সাংসদ। এ ছাড়া বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের মহাসমাবেশে জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। সাংসদেরা দাবি করেন, গ্রামেগঞ্জে আওয়ামী লীগের অবস্থা ভালো। শহরে ও টেলিভিশনের টক শোতে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়।
সাংসদদের মধ্যে বক্তব্য দেন আবদুল মান্নান, আতিকুর রহমান, সাধন মজুমদার, মাহবুব আরা প্রমুখ।