চট্টগ্রাম: নগরীর বহদ্দারহাট সংলগ্ন শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়কের বহদ্দার পুকুর এলাকায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ভেঙে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, প্রকল্প পরিচালক এ এম এম হাবিবুর রহমানসহ ৬ জনকে আসামী করে চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের মহাসচিব লায়ন অ্যাডভোকেট যাদব চন্দ্র শীল বাদি হয়ে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম নুরে আলম ভূঁইয়ার আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান বাদি। তবে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না করে অভিযোগ তদন্তের জন্য সিএমপির চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল বণিককে নির্দেশ দিয়েছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
মামলার অপর চার আসামী হলেন, সিডিএ`র প্রধান প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী, প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকুর স্ত্রী ও মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটকো-পারিশা কনস্ট্রাকশন্সের স্বত্তাধিকারী খুজেস্তা ই নূর ই নাহরিন মুন্নী, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মির আক্তার-পারিশা (জেবি) কনস্ট্রাকশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এস এ আর এম অ্যাসোসিয়েটস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মতিন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার আরজিতে আসামীদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ২৮৮, ২৮৯, ৩০৪ (ক), ৩৩৬, ৩৩৭, ৩৩৮ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৯ জুন ফ্লাইওভারের একটি গার্ডার ভেঙ্গে একজন রিক্সাচালক আহত হন। এ ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর আসামীরা কোন ব্যবস্থা নেননি। এরপর গত ২১ নভেম্বর ফ্লাইওভারের একটি লোহার পাত পড়ে একটি প্রাইভেট কার ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও একজন আহত হন।
আসামীদের কর্তব্যে অবহেলা এবং ফ্লাইওভার নির্মাণে যথাযথ নিয়ম পালন না করার কারণে গত ২৪ নভেম্বর ফ্লাইওভারের তিনটি গার্ডার ধসে ১৫ জন নিহত হন এবং অর্ধশতাধিক লোক আহত হন বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য কোন কারিগরি অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ছিলনা। শুধুমাত্র স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে কাজগুলো দেয়া হয়েছিল।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যবহৃত সরঞ্জামের কোন গুণগত মান ছিলনা এবং কার্যাদেশের শর্তে উল্লেখিত নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করে অধিক আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে আসামীরা একে অপরের যোগসাজশে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে এ বিভৎস হত্যাকান্ড ঘটান।
এতে আরও বলা হয়, ঘটনার সময় তিনি বহদ্দারহাটে অবস্থান করছিলেন। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ব্যক্তিদের রক্তের স্রোত ও লাশ দেখে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন।
বাদি অভিযোগ করেন, ঘটনার পর তিনি সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করতে চাইলেও থানা মামলা নেয়নি। এজন্য তিনি আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।