আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে কাল রাতে মুখোমুখি হয়েছিল বিশে^র অন্যতম দুই সেরা দল ব্রাজিল ও স্পেন। কিন্তু ছয় গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে কেউ কাউকে হারাতে পারেনি। দুইবার পিছিয়ে পড়েও গোল পরিশোধ করে ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচবারের বিশ^ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ম্যাচে দুই দলের দুই তরুণ তুর্কি এনড্রিক ও লামিন ইয়ামাল নিজেদের জাত চিনিয়েছেন।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে লুকাস পাকুয়েটার স্টপেজ টাইমের পেনাল্টির গোলে লা রোজারা জয় বঞ্চিত হয়। স্প্যানিশ অধিনায়ক রড্রি পেনাল্টিতে জোড়া গোল করেছেন। স্প্যানিশ রাজধানীতে কাল দুর্দান্ত এই ম্যাচ উপভোগ করতে বার্নাব্যু স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ।
ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার রড্রি ১২ মিনিটে স্পট কিক থেকে স্পেনকে এগিয়ে দেন। ৩৬ মিনিটে দূরন্ত উইঙ্গার ইয়ামালের অসাধারন পাসে ডানি ওলমো দারুণ এক গোলে স্পেনের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সাইমনের ভুলে বিরতির ঠিক আগে রডরিগো ব্রাজিলের হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন। বিরতির পর রাফিনহার স্থানে মাঠে নেমেই ওয়ান্ডার বয় এনড্রিক পাঁচ মিনিটের মধ্যে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান। লাকুস বেরালডোর বিপক্ষে ডানি কারভাহালের আদায় করা পেনাল্টি থেকে রড্রি আবারো গোল করে স্পেনকে জয়ের সুবাতাস দিতে থাকেন। কিন্তু ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো বাকি। আর সেই নাটকের দারুন এক সমাপ্তি টানতে কোনো ভুল করেননি পাকুয়েটা।
স্পেনে রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে ঘিড়ে বেশ কিছু বর্ণবাদী ঘটনার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক এই প্রীতি ম্যাচটি আয়োজন করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে বর্ণবাদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ানোর একটি বার্তা সকলের সামনে উপস্থাপিত হয়েছে। বিশ^ ফুটবলের দুই পরাশক্তি দুর্দান্ত পারফরমেন্সের মাধ্যমে ম্যাচটিকে স্মরণীয় করে রেখেছে।
এই প্রথমবারের মত ব্রাজিল অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পড়ে মাঠে নেমেছিলেন ভিনিসিয়াস। যদিও মাঠে তাকে খুব একটা সরব দেখা যায়নি। তার পরিবর্তে বিরতির পর মাঠে নামা ভিনির ভবিষ্যত মাদ্রিদ সতীর্থ এনড্রিকই সকলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। তার সাথে স্পেনের বার্সেলোনার তরুণ ইয়ামাল সমান তালে লড়াই করেছেন।
রড্রির প্রথম গোলের মূল কারিগর ছিলেন ইয়ামাল। হুয়া গোমেজের ফাউলে ইয়ামালই পেনাল্টি আদায় করে নেন। ১৬ বছর বয়সী এই উইঙ্গার প্রতিটি ম্যাচেই নিজের উন্নতির প্রমান দিয়ে যাচ্ছেন। ওলমোকে দিয়ে তিনি দ্বিতীয় গোলটি করিয়েছেন। দুর্দান্ত ফুটওয়ার্কে ফিনিশিংটাও অসাধারন করেছেন ওলমো। বিরতির ঠিক আগে সাইমন সঠিকভাবে বল পাস দিতে ব্যর্থ হলে রডরিগো সেই সুযোগে এক গোল পরিশোধ করেন।
বিরতির পর বিস্ময় বালক এনড্রিককে মাঠে নামান ডোরিভাল। আর তাতেই সফল হন সেলেসাও কোচ। শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে আসা এই এনড্রিকের একমাত্র গোলেই জয় নিশ্চিত করেছিল ব্রাজিল। নিজের ভবিষ্যত ক্লাবের হোম ভেুন্যতে এই প্রথম খেলতে নেমেছিলেন এনড্রিক। ১৭ বছর বয়সী এই তরুণ ফরোয়ার্ড নিজের প্রথম গোল আদায় করে নিতে খুব একটা সময় নেননি। কর্ণার থেকে দূরন্ত ভলিতে তিনি ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান।
ম্যাচের শেষভাগে আরও এক পেনাল্টি থেকে রড্রি গোল করার পর স্পেনের জন্য জয়টা সময়ের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রতিপক্ষ যে ব্রাজিল তা হয়তো কিছু সময়ের জন্য ভুলে গিয়েছিল স্প্যানিশরা। স্টপেজ টাইমে গালেনোর বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেন কারভাহাল। সাইমনকে উল্টো দিকে পাঠিয়ে পাকুয়েটা ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান। এর সাথে সাথেই ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজান পর্তুগিজ রেফারি এন্টোনিও নবরে।