পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বিষয়ক মার্কিন দূত মার্ক গ্রাসম্যান গত সোমবার কাবুলে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ সময় আফগানিস্তানে বিদেশি বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল জন এ্যালানও উপস্থিত ছিলেন। গ্রোসম্যান ও হামিদ কারজাই আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ছাড়াও তালেবানের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
এ সাক্ষাতে মি.গ্রোসম্যান পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার আলোচনার বিষয়বস্তু ও ফলাফল প্রেসিডেন্ট কারজাইকে অবহিত করেন। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বিষয়ক এ মার্কিন দূত ইসলামাবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সেনাবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে গতকাল আফগানিস্তান সফরে আসেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তান আফগানিস্তানের ব্যাপারে হোয়াইট হাউজকে আন্তরিকতার সঙ্গে সহোগিতা না করবে ততদিন পর্যন্ত বিদেশি বাহিনী আফগানিস্তান যুদ্ধে সফল হতে পারবে না।
সন্ত্রাসবাদ দমনের বিষয়ে সহযোগিতার জন্য আমেরিকা পাকিস্তানকে একদিকে হুমকি অন্যদিকে নানা প্রলোভন দিয়েও কাক্সিক্ষত ফল না পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে মার্কিন কর্মকর্তারা এখন পাকিস্তান সরকারকে উৎসাহ দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের কর্মকাণ্ডকে প্রশংসা বা সাধুবাদ জানানোর নীতি গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য ইসলামাবাদের ভূমিকার প্রতি মার্ক গ্রোসম্যানের প্রশংসা করা থেকে এ ধারণার সত্যতা মেলে।
গ্রোসম্যান এমন সময় পাকিস্তান সফরে যান যখন গত ছয় বছরের মধ্যে এই প্রথম হোয়াইট হাউজের কোনো কূটনীতিক আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। অথচ মার্কিন শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তারা গত ছয় বছর ধরে সবসময়ই আফগানিস্তানের ব্যাপারে এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তানের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে আসছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ দমনে মোটেও আন্তরিক নয়।
বর্তমানে পাকিস্তান সরকার কোনো সংঘাতে না গিয়ে তালেবানের সঙ্গে আলোচনার নীতি গ্রহণ করেছে। আফগানিস্তানের কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন এ আশার সঞ্চার হয়েছে যে, সেদেশে জাতীয় শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তান তার সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ও সামর্থকে কাজে লাগাবে। আমেরিকা ও আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা মনে করেন, আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যে পরিকল্পনাই বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হোক না কেন তাতে পাকিস্তানের আন্তরিক সহযোগিতা অপরিহার্য।