বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন।
বেইজিংয়ে মঙ্গলবার সকালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং জেইসি এক বৈঠকে সফররত বাংলাদেশের বিরোধী দলনেতা খালেদা জিয়াকে এ প্রতিশ্রুতি দেন বলে দলটির তরফে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, ব্যক্তিগত সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।
আর চীনের পক্ষে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
চীনা কমিউন্সিট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে গতকাল সোমবার ব্যাংকক হয়ে চীন পৌছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
সেখানে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। ওই নৈশভোজের আগে দেশটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী ওয়াং জিয়ারুই এর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের বিরোধী দলনেতা।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন খালেদা জিয়া। এ সময় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে শুরু হওয়া বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এ সময় খালেদা জিয়ার অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য চীনের কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরো বাড়ানোর আশ্বাস দেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে বিশেষ বন্ধু মনে করে চীন। তাই বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”
এ সময় বাংলাদেশকে সেতু, রাস্তা, রেল, জ্বালানি এবং নদী শাসন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ খাতে সহযোগিতা বাড়ানার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এছাড়াও বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলার ব্যাপারেও তার সরকারের আগ্রহের কথা জানান তিনি।
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে তার সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসবের প্রেক্ষিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান খালেদা জিয়া।
এ সময় খালেদা জিয়া চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন।
বিকেলে ড. মোশাররফের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দল চীনের দরিদ্র নারীদের একটি প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এছাড়াও চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ডেপুটি চিফের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান।
বস্তুত তার দল বিএনপির প্রতি বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায় ও সম্পর্ক বাড়ানোর কূটনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এশিয়ার প্রধান পরাশক্তি চীন সফর গেছেন খালেদা জিয়া।
আগামী ২০ অক্টোবর ব্যাংকক হয়ে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
এর আগে ২০১০ সালে সর্বশেষ চীন সফরে গিয়েছিলেন বিএনপি প্রধান।