বহুল আলোচিত টাইটানিক-২ এর ডিজাইন উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছেন এর মূল উদ্যোক্তা অস্ট্রেলিয়ার মাল্টি বিলিওনিয়ার ক্লাইভ পামার।
প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির কন্যা ক্যারোলিনের সহায়তায় নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে ওই ডিজাইন উন্মোচন করা হবে বলে বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।
ক্যারোলিনের পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত থাকবেন কেনেডির বোন জেন কেনেডি স্মিথ এবং নিউইয়র্কের সিনেটর রুথ হাসেলসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অস্ট্রেলীয় এই ধনকুবের টাইটানিক ডুবে যাওয়ার শতবার্ষিকী উপলক্ষে একই ডিজাইনের একটি জাহাজ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
ডিজাইন উন্মোচন উপলক্ষে আগামী ৪ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে মার্কিন সামরিক বাহিনীর পরিত্যক্ত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ইউএসএস ইন্ট্রেপিডে এক জমকালো নৈশভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।
১৯১২ সালে ১২ এপ্রিল ডুবে যাওয়ার রাতে টাইটানিকের যাত্রীরা শেষবারের মতো যে খাবার গ্রহণ করেছিলেন ৪ ডিসেম্বর নৈশভোজে আমন্ত্রিত অতিথিদের ঠিক একই মেন্যু পরিবেশন করার পরিকল্পনা করছেন পামারের।
টাইটানিক-২ নামের এই জাহাজ ২০১৬ সালে প্রথম আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে বলে আশা করছেন এর উদ্যোক্তারা। টাইটানিক যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল, ইংল্যান্ডের সেই সাউদাম্পটন বন্দর থেকেই নিউইর্য়কের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে জাহাজটি।
মূল টাইটানিকের আদলে নির্মিত টাইটানিক-২ এর দৈর্ঘ্য হবে ২৭০ মিটার, উচ্চতা ৫৩ মিটার এবং ওজন হবে ৪০ হাজার টন।
প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণিতে বিভক্ত নয়তলা বিশিষ্ট টাইটানিক-২ এ যাত্রীদের জন্য কক্ষ থাকবে ৮৪০টি। পাশাপাশি এতে টাইটানিকের মতোই ডেক থাকছে নয়টি।
এদিকে জাহাজটির প্রথম যাত্রায় এর হাল ধরতে পামার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দুনিয়া কাঁপানো হলিউড চলচ্চিত্র টাইটানিকের পরিচালক জেমস ক্যামেরনকে। তিনি এ সময় কৌতুক করে বলেন, “ক্যামেরন মাঝেমাঝেই আক্ষেপ করে থাকেন তার কোনো টাইটানিক সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতা নেই। তাই ক্যামেরনের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ।”
উল্লেখ্য, বেলফাস্টের একটি ডকইয়ার্ডে নির্মিত টাইটানিক ১৯১২ সালের ০২ এপ্রিল তার প্রথম যাত্রায় সাউদাম্পটন থেকে নিউইর্য়কে যাওয়ার পথে বিশালাকৃতির আইসবার্গের (ভাসমান বরফের পাহাড়/হিমশৈল) সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়।
এ সময় জাহাজটির যাত্রীদের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৫শ’ যাত্রী ও ক্রু পানিতে ডুবে মারা যান। তৎকালীন সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও শক্তিশালী জাহাজটির যাত্রার প্রাক্কালে বলা হয়েছিলো এটি কখনই ডুববে না। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! প্রথম যাত্রাতেই তা ডুবে যায়।