দেশীয় কাঁচামাল (ল্যাটেক্স) ব্যবহার করে উৎপাদিত কনডম অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর বিদেশে রফতানি করার সুপারিশ করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে কমিটির ৬৮তম বৈঠকে অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেড নিয়ে আলোচনার সময় এ সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি এবিএম গোলাম মোস্তফা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য এস কে আবু বাকের, খান টিপু সুলতান ও মইন উদ্দীন খান বাদল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, গত ২০১১-১২ অর্থবছরে খুলনা অ্যাসেনসিয়াল ল্যাটেক্স প্লান্ট ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যের কনডম বাজারে সরবরাহ করেছে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের বাৎসরিক কনডম চাহিদার পুরোটাই এই কারখানা থেকে উৎপাদন ও সরবরাহের লক্ষ্যে দুটি ডিপিং লাইন সংযোজন করা হয়েছে।
সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানির (এসএমসি) হিসাব মতে দেশে প্রতিদিন ৮০ লাখের ওপর কনডমের চাহিদা রয়েছে। সে হিসেবে বছরে কনডমের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি।
বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে অনুসারে, কনডমের মোট চাহিদার সাড়ে ৫৬ শতাংশের জোগান দেয় এসএমসি (রাজা, প্যান্থার, সেনসেশন, হিরো)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় প্যান্থার, ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ। পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে সরকার বিনামূল্যে বিতরণ করে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ কমডম। সরকার দাতাদের অর্থে আন্তর্জাতিক দরপত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই কনডম কেনে। ৬ দশমিক ৩ শতাংশ কনডম (ক্যারেক্স, টাইটানিক, টুইন লোটাস, ফিলিংস, গ্রিন লাভ ইত্যাদি) বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বাজারে বিক্রি করে। বাকি প্রায় ১৩ শতাংশ কনডম মানুষ পায় এনজিও বা অন্য উৎস থেকে।
অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানি সংসদীয় কমিটিকে বলেছে, উৎপাদন বাড়াতে পারলে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়েও কনডম বিদেশে রফতানি করা সম্ভব। এছাড়া দেশীয় ল্যাটেক্স ব্যবহার করে হ্যান্ড গ্লাভস ও রাবার ক্যাথেটার উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
বৈঠকে অর্গানোগ্রামের বাইরে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ না করার এবং দক্ষ জনবল নিয়োগ করার ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের ঐতিহাসিক গুরুত্বের দিক বিবেচনা করে জাতীয়ভাবে সংরক্ষণের জন্য পর্যটন করপোরেশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব মুহম্মদ হুমায়ন কবীর, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।