শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী রাজিউদ্দীন আহমেদ রাজুর কর্মসূচি প্রতিরোধের সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকেল ৩টায় বাসে অগ্নিসংযোগ ও গোলাগুলির ঘটনায় নরসিংদী রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ সময় সাংবাদিক, পৌর মেয়র ও পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে পৌর মেয়র কামরুজ্জামান, সাংবাদিক সঞ্জীব দাস, মাখন দাস ও জসিম উদ্দীন, স্থানীয় ঠিকাদার নাজিম উদ্দীন ও চেম্বারের পরিচালক নুরে আলম বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী রাজিউদ্দীন আহমেদ রাজুর আগামী সোমবারের অনুষ্ঠিতব্য কর্মসূচিকে প্রতিহত করতে লোকমান সংগ্রাম পরিষদ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশের আয়োজনের ডাক দেয়।
দুপুরে প্রয়াত মেয়র লোকমানের ভাই ও বর্তমান পৌর মেয়র কামরুজ্জামান শতাধিক নেতাকর্মীসহ মিছিল নিয়ে শহরের শাপলা চত্বর থেকে সমাবেশস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়।
এসময় মেয়রের লোকজন পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ও র্যাব লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
এতে পৌর মেয়রের কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এক ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে ২ জন সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ সময় গোলাগুলিরও ঘটনা ঘটে।
এরপর মেয়র সর্মথকরা বিক্ষিপ্তভাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে জড়ো হয়ে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে আগরতলা-ঢাকাগামী ত্রিপুরা রোড ট্রান্সর্পোট কর্রোপরেশনের (টিআরটিসি) ১টি, হানিফ পরিবহনের ২টি, ইউনিক পরিবহনের ১টি ও শ্যামলী পরিবহনের ২টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে মেয়র সমর্থকদের হটিয়ে দিতে আবার রাবার বুলেট ছোড়ে। এসময় মেয়র সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ করে পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুলিশসহ আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়।
এদিকে, এ ঘটনার সময় শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় যান চলাচল ফের স্বাভাবিক হয়।
এবিষয়ে নরসিংদী পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দীন জানান, পৌর মেয়র কামরুজ্জামানের পক্ষের লোকজন চোরাগোপ্তা হামলা চালায়।
তিনি জানান, সংর্ঘষ থামাতে পুলিশের সঙ্গে মেয়র সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে।