হারতে হারতে শেষপর্যন্ত জয় পাওয়া দারুণ রোমাঞ্চকর। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে রোববার আবাহনী তেমনই এক ম্যাচ জিতেছে। প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে চ্যাম্পিয়নরা দুই উইকেটে হারিয়েছে নবাগত শেখ জামালকে। জয়ে ফিরেছে রানার্সআপ মোহামেডানও। গাজী ট্যাঙ্ক টানা দুই ম্যাচে অপরাজিত।
মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটে ২২৬ রান প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। শামসুর রহমানের ৫০, মেহরাব হোসেন জুনিয়রের ৩৪, শ্রীলঙ্কার জিহান মুবারকের ৫৫ ও ভারতের সুজিত পারবাতানির ২৬ রানে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের স্কোর হয় আট উইকেটে ২২৫। জাতীয় দলের মিডিয়াম পেসার ফরহাদ রেজা নয় ওভারে ৪০ রান দিয়ে তিনটি এবং সমান ওভার বল করে ৫০ রান খরচায় ইংলিশ কাউন্টি লিগের অলরাউন্ডার পিটার ট্রেগো দুই উইকেট নিলে, প্রতিপক্ষকে ওই স্কোরে আটকে রাখতে পারে আবাহনী।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ২২৫/৮ (৫০ ওভার)
আবাহনী লিমিটেড: ২২৭/৮ (৪৭.৪ ওভার)
ফল: আবাহনী দুই উইকেট জয়ী
শেখ জামালকে মোকাবেলা করতে নেমে ৪৯ রানে দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা ব্যাকফুটে চলে যায় আবাহনী। পরে তা পুষিয়ে দেন ইংলিশ ক্রিকেটার পিটার ৩৫ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে। দশম ওভারে পেসার ডলার মাহমুদের বলে পরপর চারটি চার হাঁকালে রানের গতি বেড়ে যায়। ১১০ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারালে চাপে পড়ে চ্যাম্পিয়ন শিবির। পরে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এবং ইলিয়াস সানি ৬৮ রানের জুটি গড়ে খেলা জমিয়ে তোলেন। সানি ৩৯ করে সাজঘরে ফিরলেও মাহমুদউল্লাহ মাটি কামড়ে উইকেটে পড়েছিলেন। শেষ ১৮ বলে জয়ের জন্য আবাহনীর দরকার ছিলো ১৭ রান।
শেখ জামালের অধিনায়ক মুশফিকুর বোলার নির্বাচনে দূরদৃষ্টিতার পরিচয় দিতে পারেননি। বাঁহাতি স্পিনার মাহমুদুল হাসানের হাতে বল তুলে দিলে স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটসম্যান নাজমুল ইসলাম অপু চার বলেই (৪, ৬, ৪, ৪) ১৮ রান তুলে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ৪৭.৪ ওভারে জয় নিশ্চিত হয় লিগের প্রথম ম্যাচে ব্রাদার্সের কাছে হেরে যাওয়া আবাহনীর। মাহমুদউল্লাহ শেষপর্যন্ত উইকেট অক্ষত রাখেন ৫১ রানে। শেখ জামালের সোহরাওয়ার্দী ও সুজিত পারবাতানি দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে মোহামেডান ৩৩ রানে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিংকে হারিয়েছে। দোলেশ্বরের পাকিস্তানি বাঁহাতি অফস্পিনার কাইসার আব্বাসের মারাত্মক বোলিংয়ে একের পর এক উইকেট হারিয়েও ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার আগে ৪৯.৪ ওভারে ২১৫ রান করে মোহামেডান। রাজিন সালেহ ৫৯, নাঈম ইসলাম ৩৯, ইমতিয়াজ হোসেন ৩৭ ও ইয়াসির মুর্তজা ২৬ রান করেন। দোলেশ্বরের কায়সার আব্বাস ১০ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ছয় উইকেট নিয়েছেন।
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ২১৫/১০ (৪৯.৪ ওভার)
প্রাইম দোলেশ্বর: ১৮২/১০ (৪৭.৪ ওভার)
ফল: মোহামেডান ৩৩ রানে জয়ী
জবাব দিতে নেমে মোহামেডানের বোলিং আক্রমণে ১৮২ রানে গুটিয়ে যায় দোলেশ্বর। বিপিএল’র আইকন ক্রিকেটার জাতীয় দলের তারকা শাহরিয়ার নাফীস পরপর দুই ম্যাচে রান করতে পারেননি। মোহামেডানের অধিনায়ক নাঈম তিনটি, ইয়াসিম, নূর হোসেন ও ইমতিয়াজ দুটি করে উইকেট নেন।
বিকেএসপি মাঠে সূর্য তরুণকে ৮২ রানে হারিয়েছে গাজী ট্যাঙ্ক ক্রিকেটার্স। অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুনের ৮২, আয়্যুব ডোগার ৩৮, আলাউদ্দিন বাবুর অপরাজিত ২৯ ও মোহাম্মদ সামির ৩১ রানের ইনিংসগুলো নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে নয় উইকেটে ২২৯ রান করে গাজী ট্যাঙ্ক। সূর্য তরুণের পেসার শফিউল ইসলাম ১০ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে চারটি এবং রাজা আলী দার ১০ ওভারে ৩৫ রানে দুই উইকেট নেন।
গাজী ট্যাঙ্ক ক্রিকেটার্স: ২২৯/৯ (৫০ ওভার)
সূর্য তরুণ: ১৪৭/৯ (৪৬.৪ ওভার, হাতে চোট পাওয়ায় একজন ব্যাট করতে পারেনি)
ফল: গাজী ৮২ রানে জয়ী
জবাবে গাজীর বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বল খেলতে গিয়ে নয় উইকেটে ১৪৭ রান তুলতে পারে সূর্য তরুণ।
দুই পেসার পাকিস্তানের সামি ৯ ওভারে ১৪ রান দিয়ে দুটি, অলরাউন্ডার আলাউদ্দিন বাবু ১০ ওভারে ২৭ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন।