আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এডিস মশা নির্মূল করে ডেঙ্গু সহনীয় পর্যায়ে আনতে সিটি করপোরেশনের সকল কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
রোববার (০১ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদারকরণ’ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ প্রদান করেন।
মন্ত্রী বলেন, রাজধানীবাসীকে মশামুক্ত রাখতে মন্ত্রণালয় এবং সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চলমান কার্যক্রমকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যেই আজকের সভার আয়োজন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করে একটি সন্তোষজনক জায়গায় পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকায় চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বারবার সচেতন করার পরেও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। সরকারের কাজ হচ্ছে মানুষকে সচেতন করা এবং সেই কাজ সরকার প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে। এখন মানুষ যদি সচেতন না হয়ে এডিস মশার প্রজননে ভূমিকা রাখেন। সেই মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবেন। নানা সমস্যায় ভুগবেন আর চিৎকার করে সরকারকে দোষ দিবেন। এটি সমীচীন হবে না। আপনারা নিজে সচেতন না হলে সরকার আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, দু-একজনের জন্য কোটি মানুষের জীবন অতিষ্ট হতে পারে না। গুটি কয়েকের জন্য জনদুর্ভোগ ও কষ্ট কোন ক্রমেই মেনে নেওয়া হবে না। এ কারণে যাদের বাসা-বাড়িতে বা ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেককে জেল ও জরিমানা প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, আইইডিসিআর-এর ভবিষ্যৎ বাণী ছিলো ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ডেঙ্গু রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা তিনগুণ বেশি হবে। কিন্তু আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এখন এডিস মশার ঊর্বর সময় হওয়াতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও অল্প সময়ের মধ্যেই তা নিয়ন্ত্রণে আনা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, প্রতি ওয়ার্ডকে দশটি সাব-জোনে ভাগ করে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি গঠনের মাধ্যমে করোনা, ডেঙ্গুসহ সকল সমস্যা মোকাবিলা করার পাশাপাশি সব ধরনের সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে। জনপ্রতিনিধিরা যদি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সম্মিলিতভাবে কাজ করে তাহলে যেকোন সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব। সম্মিলিত প্রচেষ্টা কখনো ব্যর্থ হয় না।
কাউন্সিলরদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় শপথ নেওয়ার আহবান জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, নিজে অন্যায় করবেন না কাউকে অন্যায় করতে দিবেন না। যত বড় শক্তিশালীই হোক অন্যায়ের কাছে মাথা নত করা যাবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অনেক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আসল ঠিকানা গোপন রাখছেন। এতে করে এডিস মশা নিধনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কারণ যেখানে রোগী পাওয়া যাচ্ছে সেখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে এটা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা হয়েছে। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদফতর এব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, মন্ত্রণালয় ও সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কাউন্সিলরগণ অংশগ্রহণ করেন।