হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্ত হচ্ছে ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক রাডার। বিমানবন্দরের বর্তমান রাডার দেশের পূর্ণ সীমানা নিয়ন্ত্রণে কাভার করে না। ফলে অন্য কোনো দেশের বিমান থেকে আকাশপথের রাজস্ব ও জরিমানা আদায়ে অত্যাধুনিক রাডার ব্যবস্থা যুক্ত করতে চাইছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতের রায়ে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা নিজেদের সম্পত্তি হিসেবে পেয়েছে। কিন্তু বিশাল এ সমুদ্রসীমায় অন্য দেশের বিমান চলাচল করলেও শাহজালাল বিমানবন্দরে স্থাপিত দীর্ঘদিনের পুরনো অ্যানালগ রাডার দিয়ে তা শনাক্ত প্রায় অসম্ভব।
সাধারণত এক দেশের বিমান অবৈধভাবে অন্য দেশের আকাশসীমায় ঢুকলে কমপক্ষে ৫০০ ডলার জরিমানা দিতে হয়। নতুন রাডারের আওতায় বাংলাদেশের অধিকারকৃত সমুদ্রসীমা বা আকাশ সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধিসহ জরিমানা আদায়ের সুযোগ পাবে বেবিচক।
এছাড়া পুরনো রাডারের কারণে অনেক সময় বিমানের গতিবিধি শনাক্ত সম্ভব হতো না। এতে ঝুঁকি নিয়েই বিমান উড্ডয়ন, অবতরণ ও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। নতুন রাডার যুক্ত হলে এই সমস্যাগুলো সমাধান হয়েছে যাবে। এর আগে দেশের আকাশসীমা নিরাপদ করতে ফ্রান্সের সঙ্গে একটি চুক্তি করছে বাংলাদেশ।
এ লক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) মন্ত্রিপরিষদ কমিটির সভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কমিউনিকেশনস, নেভিগেশন অ্যান্ড সার্ভিল্যান্স-এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট (সিএনএস-এটিএম) সিস্টেমসহ রাডার স্থাপন কাজ থালস, ফ্রান্সের কাছ থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে সংগ্রহের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৫৮ কোটি ৪০ লাখ ৩২ হাজার টাকা। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার এসব কথা বলেন।
বেবিচক সূত্র জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে এখনো আইএলএস ক্যাটাগরি একটি রাডার রয়েছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে অত্যাধুনিক রাডার ও রাডার টাওয়ার স্থাপন করতে হবে। নতুন রাডার ক্রয়ের ফলে আরও উন্নত হবে বেসামরিক বিমানের উড্ডয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা। একই সঙ্গে উন্নত হবে এয়ারপোর্টের ব্যবস্থাপনা। রাডার ক্রয়ে বিভিন্ন স্ট্যান্ডার্ডস ও রেকমন্ডেড প্র্যাকটিস বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স এক সঙ্গে কাজ করবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আকাশসীমায় নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বিমান চলাচলের সুবিধার্তে ‘হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিএনএস-এটিএম (কমিউনিকেশন, নেভিগেশন ও সার্ভিলেন্স-এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট) সিস্টেমসহ রাডার স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে বেবিচক। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭৩০ কোটি ৫৪ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে।