কিংস কলেজ হাসপাতাল থেকে: অবশেষে মৃত্যুর দেশেই পাড়ি জমালেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক। লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।
হাসপাতালে গত তিন দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিলো আবদুর রাজ্জাককে।
সাপোর্ট খুলে নেওয়ার পর লন্ডন স্থানীয় সময় ৩টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ ৯টা ৫০ মিনিট) লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনার সাইদুর রহমান খান তার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করে সান্ত্বনা দেন আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাককে।
এর কিছুক্ষণ আগেও লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক বলছিলেন, ‘হি ইজ স্টিল অ্যালাইভ। বাট নো হোপ ইজ দেয়ার।’
বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে আবদুর রাজ্জাকের লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। তখনও তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিলো। তবে চিকিৎসকরা বলছিলেন, ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকেই যাচ্ছেন আবদুর রাজ্জাক। যেকোনো মুহূর্তেই দুঃসংবাদ শোনাতে হতে পারে বলে উল্লেখ করেন একজন চিকিৎসক।
এর অল্প সময়ের মধ্যেই হাই কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের মৃত্যুর কথা জানান।
লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার আগে থেকেই আবদুর রাজ্জাকের শরীরে কোনো ধরনের ওষুধ কাজ করছিলো না।
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে, ঢাকায় খবর আসে আবদুর রাজ্জাক আর নেই। ঢাকার মিডিয়াগুলো সে খবর প্রচার করতে থাকে। ঢাকায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও জানানো হয় শোক।
এরপর রাত পৌনে নয়টার দিকেলন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টার রাশেদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আবদুর রাজ্জাক মৃত, একখা এখনি বলা যাবে না। চিকিৎসকরা বলেছেন, এখনো তাকে মেডিকেশনের আওতায় রাখা হয়েছে। তবে ঔষধ দেওয়ার পর তার শরীর কোনো ধরনের রেসপন্স করছে না।’
আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাক চিকিৎসকদের অনুরোধ করেন একজন মৌলভী ডেকে তওবা পড়ানোর পরেই লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার জন্য।
তার কথা মতোই বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ৯টার দিকে একজন মওলানাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আবদুর রাজ্জাকের জন্য তওবা পড়ানো শেষ হলেই তার লাইফ সাপোর্ট পর্যায়ক্রমে খুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার পর প্রায় ২০ মিনিট বেঁচে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের এই সুর্যসেনা আবদুর রাজ্জাক।