আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল এমপি বলেছেন, ‘‘দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা আবাসন সংকট। কারণ, আমাদের যে জনসংখ্যা তার অধিকাংশ মানুষ মাথা গুজবার ঠাঁই পান না। অথচ প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক সরকারে দায়িত্ব মানুষের বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর ব্যবস্থা করা।’’
জলিল বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রিত যে ব্যাংকগুলো রয়েছে তাদের নিজস্ব গতিতে কাজ করতে দেয় না বাংলাদেশ ব্যাংক। আর সরকার এতো বেশি ঋণ নেয় যে, সাধারণ মানুষ আর ঋণ পান না। এসবের অবসান দরকার।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে “আবাসন শিল্পের বর্তমান সংকট ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের করনীয় দিক” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমি দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে বলছি, ঢাকায় এখনো অনেক মানুষ রাস্তায় ঘুমান। বড় দালানের পাশে মাটিতে ঘুমান। এটা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। ব্রিটিশ, পাকিস্তান আর ৪০ বছরের বাংলাদেশের কোনো সরকারই মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে নাই। আসলে সমাজের মানুষের মাথা গুজবার ঠাঁই করে দেওয়াটাই বড় কথা।’’
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ‘‘গুলশানে ব্যাংকের জন্য কাঠা প্রতি ১ লাখ টাকায় কিনেছিলাম। এখন কাঠা প্রতি সে জমিরই বর্তমান মূল্য ১০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের সব জায়গায় জমির দাম কেন যেন ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছে। রিহ্যাবের সদস্যরা বড়লোকের জন্য প্রকল্প করছেন। তাদের গরিব ও দরিদ্রদের জন্য আবাসন করা উচিত। তারা লাভ করুন, কিন্ত সাধারণ মানুষের জন্য করুন।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমার ব্যাংকিংয়ের অভিজ্ঞতা হলো, বড়লোকরা টাকা ঋণ নিলে ফেরত দেন না। সুদ বেশি হলে মাফ চান। কিন্ত গরিবরা ভযে ব্যাংকের ঋণ ফেরত দেন। রিহ্যাবে বসুন্ধরার মতো বড় বড় কোম্পানিগুলোকে আমি আহ্বান জানাবো, সাধারণ মানুষের জন্য প্রকল্প আনুন।’’
জলিল আরো বলেন, ‘‘সুশীল সমাজ ও বুদ্দিজীবীদের বলবো, জনগণের কল্যাণে আপনারা চিন্তা করুন। বৃদ্ধিজীবী আর সুশীল সমাজের লেবাসে শুধু উপদেশ দেবেন, তা হবে না। আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধা আছে, আপনারা মানুষের জন্য ভাবুন। আবাসন শিল্প নিয়ে যে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে, তাতে একসময় এ সেক্টরের সমস্যার সমাধান হবে বলেও আমি আশা করি।’’
গোল টেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবিদ রহমান।