এই প্রথমবারের মতো সৌদি আরব সরকার তাদের নারী অ্যাথলেটদের অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
লন্ডনে সৌদি দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সৌদি আরবের অলিম্পিক কমিটি নির্বাচিত নারী অ্যাথলেটদের তত্ত্বাবধান করবে।
সৌদি সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগে পুরো সৌদি টিমই অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে এমন আশঙ্কার অবসান ঘটল।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লন্ডন অলিম্পিকের আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাকি থাকতে অলিম্পিকের মানদণ্ড অনুযায়ী শো-জাম্পার দালমা রুশদি মালহাস একমাত্র যোগ্য নারী অ্যাথলেট হিসেবে টিমে জায়গা পেয়েছেন।
এ অবস্থায় যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়ার শর্তে নারীদের অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। তবে সেক্ষেত্রে তাদের অবশ্যই ‘মর্যাদাপূর্ণ’ পোশাক পরে খেলতে নামতে হবে।
মর্যাদাপূর্ণ পোশাক বলতে সৌদিতে প্রচলিত পোশাককে বুঝানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শালীন, ঢিলেঢালা পোশাক এবং ‘স্পোর্টস হিজাব’ বা মুখ খোলা রেখে মাথায় স্কার্ফ পরে খেলার ব্যাপারে তারা অনুমতি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবের রক্ষণশীলরা এখনও সেখানকার নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের চরম বিরোধিতা করে। ফলে দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে নারীদের খেলাধুলা করার রীতির প্রচলন হয়নি।
রক্ষণশীল রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি নারীদের অলিম্পিকে অংশ গ্রহণ করতে দেওয়ার এ সিদ্ধান্তকে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল বাদশাহী শাসনের একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, জুনেই জেদ্দায় অনুষ্ঠিত এক গোপন বৈঠকে সৌদি নারীদের অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানকারীরা এ বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছে।
এ সংক্রান্ত একটি চূড়ান্ত ঘোষণাও প্রস্তুত ছিল বলে জানা যায়। তবে যুবরাজ নায়েফের হঠাৎ মৃত্যুতে এ ঘোষণা বিলম্বিত হয়।
অলিম্পিকে নারীর অংশ নেওয়ার ব্যাপারে রাজা আবদুল্লাহর ইতিবাচক চেষ্টাকেই বড় করে দেখছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের মতে, এমন একটি স্পর্শকাতর ইস্যুকে তিনি খুব সূক্ষ্ণভাবে সামাল দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৬০’র দশকে বাদশাহ ফয়সাল হত্যার পেছনে নারী শিক্ষায় তার পক্ষপাতিত্ব এবং টেলিভিশনের পর্দায় তার উপস্থিতিকে কারণ হিসেবে দেখে থাকেন অনেকে।