রায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাঠের পুল এলাকার মেট্রো নিটওয়্যারে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে সংঘর্ষে পুলিশ সাংবাদিক-শ্রমিকসহ আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে শ্রমিক-কর্মকর্তাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তখন শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে ভাংচুর করে। পরে সমস্যা সমাধানে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শ্রমিক-মালিক-পুলিশ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠক চলাকালে রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে বাক-বিতণ্ডার সূত্র ধরে শ্রমিকরা ফের বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে কারখানায় আবারও ভাংচুর শুরু করে। এসময় পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়।
এ ঘটনায় শ্রমিক, সাংবাদিক ও পুলিশসহ প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৪, নারায়ণগঞ্জ এর সিনিয়র এএসপি আবদুল খালেক জানান, সংঘর্ষে তাদের ৭ থেকে ১০ জন পুলিশ আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা ১৫ থেকে ২০ রাউন্ড টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট ছেড়েছে।
তিনি আরও জানান, রাত ১২টা পর্যন্ত সেখানে উত্তেজনা চলছিল। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে খালেক আরও জানান, রাতে বৈঠক চলাকালে হঠাৎ করেই শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। এসময় শিল্প পুলিশ সদস্যরা শ্রমিকদের প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু শ্রমিকেরা সে নির্দেশ পালন না করে উল্টো পুলিশ ও গার্মেন্টের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হন।
এসময় হঠাৎ করে শ্রমিকদের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে গার্মেন্টেসের ভেতরে কিছু শ্রমিকদের আটকে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্য শ্রমিকদের মধ্যে থাকা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
তখন শ্রমিকেরা পুলিশের উপর হামলা চালায় ও বৃষ্টির মত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষের সময়ে ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলের কাঠেরপুল ও এর আশপাশ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ।
আহতদের মধ্যে ৪ শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন সজীব, তাজুল, সাইফুল ও মামুন। বাকিদের পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। পথচারীদের মধ্যে দোকানদার কালাম আহত হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের স্বজনদের পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
সংঘর্ষে সময় টিভির নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি শরীফউদ্দিন সবুজও আহত হয়েছে।
এ ব্যাপারে গার্মেন্ট মালিকদের বিকেএমইএ’র শ্রমিক সম্পর্কিত কমিটির চেয়ারম্যান জিএম ফারুক জানান, নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে শ্রমিকেরা কর্মকর্তাদের মারধর করেছিল। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের শান্ত করে। কিন্তু রাতে বৈঠক চলাকালে আবারও শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান ও প্রতিষ্ঠানের এমডি ঘটনাস্থলে আসছেন বলে তিনি জানান।