তিন বছর আগে অন্য দেশে গিয়ে, ১০ মাসের কারাদণ্ড আর ১০ হাজার ইউরো জরিমানার মুখে পড়লেন তিনি! এই অংক ৯ লক্ষ টাকার বেশি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক কর্মীকে মারধর করেছিলেন তিনি! স্বয়ং রাজকন্যার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এবং এত বড় শাস্তির কথা শুনে সকলেই স্তম্ভিত। তিনি সৌদি রাজকন্যা হাসা বিনতে সালমান। প্যারিসের আদালতে এই সাজা হয়েছে তাঁর।
অভিযোগ, ২০১৬ সালে প্যারিসে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে এক কর্মীকে মারধর করেছিলেন রাজকন্যা হাসা এবং তাঁর দেহরক্ষী রানি সইদি। এই অপরাধেই হাসার দশ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ফ্রান্সের একটি আদালত। একই আদালতে রাজকন্যা হাসার দেহরক্ষীরও আট মাসের কারাদণ্ড হয়।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বোন ও সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের মেয়ে ৪৩ বছরের রাজকন্যা হাসা । তাঁর এবং তাঁর দেহরক্ষীর ১০ এবং ৫ হাজার ইউরো জরিমানাও ঘোষিত হয়েছে। ২০১৬ সালে ঘটে যাওয়া ওইঘটনার পরেই ফ্রান্স ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন হাসা। তার অনেক দিন পরে, গত বছরের জুলাই মাসের ৯ তারিখে রাজকন্যার অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরু করে ফ্রান্সের আদালত। অবশেষে বিচার শেষ হলে, হাসা ও তাঁর দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করা হয়।
কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার পর হাসার আইনজীবী ইমানুয়েল মইন বলেন, তাঁর মক্কেল অত্যন্ত বিনয়ী, ভদ্র এবং সংস্কৃতিমনা। তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
সূত্রের খবর, প্যারিসে হাসার একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। সেখানে কাজ করতেন আশরাফ ইদ নামের এক মিশরীয় ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, ঘটনার দিন তাঁকে ওই অ্যাপার্টমেন্টের ষষ্ঠ তলায় ডেকে নেওয়া হয় এবং রাজকুমারীর পায়ের পাতায় চুমু খেতে বাধ্য করা হয়। একটা সময়ে রাজকন্যা হাসার নির্দেশে তাঁর দেহরক্ষী ওই কর্মীকে মারধর করেন, তাঁকে কয়েক ঘণ্টা বেঁধে রাখেন।
তবে রাজকন্যা তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন বরাবর। তাঁর বক্তব্য, ওই কর্মী মোবাইলে তাঁর ছবি তুলছিলেন। তিনি বারণ করলেও শোনেননি। হাসার দাবি, ছবি তুলে সেগুলো বিক্রি করার মতলব এঁটেছিলেন ওই কর্মী। যদিও মারধরের শিকার আশরাফ বলছেন, তিনি ওই অ্যাপার্টমেন্টের প্লাম্বার। তাঁকে শৌচাগারের বেসিন সারানোর জন্য ডাকা হয়েছিল। ওই কাজের জন্যই তিনি বেসিনের ছবি তুলেছিলেন। রাজকন্যার ছবি তোলেননি তিনি।
রাজকন্যার আইনজীবী জানিয়েছেন, সৌদি আইনে এবং রাজকন্যার নিরাপত্তার খাতিরেই তাঁর ছবি তোলাটা নিষিদ্ধ। সেই কারণেই বাধা দেওয়া হয়েছিল ওই কর্মীকে।