খুলনা পাবলিক কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র আল মাসুদ পরশকে ৯দিন আগে অপহরণ করা হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি।
খুলনার মহেশ্বরপাশার পাট রপ্তানিকারক আলাউদ্দিন হাওলাদারের ‘দৌলত মনজিল’ বাড়ীর সবার মধ্যেই এখন অজানা আতংক। এই বাড়ীর বড় ছেলে খুলনা পাবলিক কলেজের বাণিজ্য বিভাগের মেধাবী ছাত্র আল মাসুদ পরশ ১৭ মে সকাল থেকে নিখোঁজ।
ঘটনার দিন আশিকসহ তারই কয়েকজন পরিচিত বন্ধু তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ এবং কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তবে পরশের বাড়ীতে মোবাইল করে তাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে এবং ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।
পরশের পিতা আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে যে, প্রশাসনকে জানানোর জন্য তার পরিণতি ভাল হবে না। ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণের মধ্যে তিনি ৫ লাখ টাকা দিতে রাজী হলেও তাদের পক্ষ থেকে কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি দৌলতপুর থানায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে তিন দিনের রিমান্ডেও এনেছে। তবে এখনও ছেলে উদ্ধার না হওয়ায় তিনি খুবই হতাশ হয়ে পড়েছেন।
মামলার আসামিরা হলো- সৈয়দ আশরাফ হোসেন ওরফে আশিক, সৈয়দ আফতাব হোসেন, শেখ জুয়েল মাহমুদ, মোঃ আব্দুল হালিম ও মোঃ রফিকুল ইসলাম।
নিখোঁজ পরশের পিতা জানান, তিনি ঘটনাটি থানায় জিডি করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ শুনে মামলা গ্রহণ করে। আসামিরা গ্রেফতার হলেও তার ছেলে উদ্ধারের কোন খবর না পাওয়ায় তারা খুবই হতাশ হয়ে পড়েছেন।
নিখোঁজ পরশের মা ছেলের ছবি হাতে সব সময় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার সন্তান ফেরতের দাবি জানিয়েছেন। ছোট বোন আর এক ভাইর দিন কাটছে পথের পানে চেয়ে চেয়ে।
দৌলতপুরের প্রবীণ পাট ব্যবসায়ী আলহাজ আব্দুল মান্নান বলেন, তাদের ৫০ বছর ব্যবসা জীবনে কোন পাট রপ্তানিকারকের এমন ঘটনা ঘটেনি। তিনি নিজেই এই ঘটনায় পাট শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিজেএ কয়েকদফা বৈঠক করে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিজেএর পক্ষ থেকে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান এই প্রবীণ পাট রপ্তানিকারক।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ৫ জনকে প্রথম তিন দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার ২য় দফা ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।
তিনি জানান, আল মাসুদ পরশ সর্বশেষ ডুমুরিয়া এলাকায় ছিল বলে তার মোবাইলের কল রেকর্ড হতে জানা গেছে। রিমান্ডে গ্রেফতারকৃত ৫ আসামিই স্বীকার করেছে তারা পরশকে ডেকে এনেছে। আসামিরা স্বীকার করলেও কেন পরশকে উদ্ধার করা যাচ্ছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার এপিএসÔর মোবাইল করার কথা অস্বীকার করেন।