মাইনাস ওয়ান ফর্মুলার মাধ্যমে খালেদাকে রাজনীতি থেকে সরানোর অথবা সংশোধন হবার প্রস্তাব দিলেন জাতীয়তাবাবাদী সমাজতান্ত্রিক দল(জাসদের) সভাপতি কমরেড হাসানুল হক ইনু এমপি।
প্রসঙ্গত, ফখরুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করার ফর্মুলার নামই ‘মাইনাস টু’ নামে পরিচিত।
হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সাম্প্রতিককালে আলোচনা হচ্ছে যে আবারো মাইনাস টু ফমূলা বাস্তবায়ন করা হবে। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হবে না। যারা শেখ হাসিনা আর খালেদাকে এক পাল্লায় মাপছেন তারা মূলত যুদ্ধাপরাধী। হাসিনা আর খালেদা এক নয়। তবে মাইনাস ওয়ানের মাধ্যমে খালেদাকে রাজনীতি থেকে সরাতে হবে। কারণ খালেদা জিয়া সাম্প্রদায়িক বা যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগী শক্তি।
তিনি বলেন, খালেদাকে রাজনীতি থেকে সরাতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে একজোট হতে হবে। সবাইকে এক হয়ে খালেদা আর তার দোসরদের রাজনীতির কবর দিতে হবে। সবাইকে এক হয়ে অভিযানে নামতে হবে। যুদ্ধাপরাধ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অভিযান ও আন্দোলন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছিলো।
তিনি আরো বলেন, খালেদা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালে কাজ করছেন। তিনি সবসময় সাম্প্রদায়িকতার পক্ষ নেন। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক যুদ্ধাপরাধীরা দেশের সংবিধান, শিক্ষা- সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় শত্রু। তাই আমাদের পিছু হটার সুযোগ নেই।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের বর্ধিত হলে সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী ।
সংগঠনের সমন্বয়ক অধ্যাপক অজয় রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কলামিস্ট হারুন হাবিব, খেলাঘর আসরের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি আতিয়ার রহমান ও সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব নুর মোহাম্মদ তালুকদার প্রমুখ।
রাশেদ খান মেনন বলেন, অনেক সংশয় ও দূর্বলতার পরেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে। এই বিচার নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিএনপি- জামায়াত। খালেদা জিয়া হিলারির সাথে বৈঠকেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে বলেছেন। তাই মিডিয়ার সাংবাদিক বন্ধুদের সাহসী ভুমিকা নিতে হবে। এ ব্যপারে নিরপেক্ষ থাকার কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, বিএনপি জামাত ক্ষমতায় আসলে শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষতি হবে। অ্যামনেস্টিও যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে মিথ্যে রিপোর্ট করে। অথচ আমেরিকার স্বার্থের বিরুদ্ধে তা করে না।
উল্লেখ্য, হাসানুল হক ইনু আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধানীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ে বাকশাল গড়ন করার পর জাসদকে নিষিদ্ধ করা হলে ইনুর নেতৃত্বে গণবাহিনী গঠিত হয়েছিলো। বর্তমানে তিনি জাতীয় সংসদের টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি।