‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বুঝতে পেরেছেন যে, ব্যারিস্টার মওদুদ তাকে কুবুদ্ধি দিয়েছিলেন। কারণ, দ্রুত বিচার আইনের জনক ছিলেন খালেদা জিয়া, আর এ আইন করার বুদ্ধি এসেছে মওদুদের কাছ থেকে। আজ তারা নিজেদের তৈরি করা ফাঁদে নিজেরাই ধরা পড়েছেন।’
এমনটাই মন্তব্য করেছেন দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি। দ্রুত বিচার আইনকে কালো আইন বলেও আখ্যা দেন তিনি।
শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে-২০১২ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনেক বুদ্ধিজীবী বলেছেন, রেলের ঘটনা আড়াল করার জন্যই নাকি বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে উল্লেখ করে সুরঞ্জিত আরো বলেন, ‘আমরা যারা সিলেটবাসী দল-মতের পার্থক্য থাকলেও সুসম্পর্কের দিক দিয়ে আমরা সবাই এক। প্রয়াত বিএনপি নেতা এম সাইফুর রহমানের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক ছিল। ইলিয়াসের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আমি মর্মাহত।’
ইলিয়াস নিখোঁজ, সাগর-রুনি ও সৌদি কূটনীতিবিদ হত্যার ঘটনায় তৃতীয় শক্তির হাত রয়েছে বলেও দাবি করেন সুরঞ্জিত। তিনি বলেন, ইলিয়াসের নিখোঁজের ঘটনা রাজনৈতিকভাবে বিবেচনা না করে মানবিকভাবে দেখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এসব ঘটনার কোনো ক্লু খুঁজে পাচ্ছি না। তার একটাই কারণ হচ্ছে, এগুলো নিখুঁত ও নিপুণ হাতের ঘটনা।’
‘সম্প্রতি রেল মন্ত্রণালয়কে নিয়ে বিজিবি’র সদর দফতরে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা সবার জানা আছে। আর আমি অন্যের দায় কাঁধে নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে পদত্যাগ করে একটি নতুন গণতন্ত্রের সূচনা করেছি’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিরোধী দলের ৩৩ জন নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত চার দলীয় জোট সরকারের শাসনামলে আমাদের অগণিত নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।’
তিনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘দুধও খাবেন, মধুও খাবেন এবং এর সঙ্গে তামাকও খাবেন, তা হবে না। এর মানে হচ্ছে, নির্বাচিত সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার এক সঙ্গে থাকতে পারে না।’
তিনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি কখনো বলেন যে, সরকারকে লুলা-ন্যাংড়া করে দেবেন। আবার মওদুদ সাহেবরা হুমকি দেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
তিনি মওদুদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি গণঅভ্যুত্থানের খলনায়ক। আপনাকে দিয়ে গণঅভ্যুত্থান সম্ভব হবে না।’
বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাড. সত্যেন্দ্র চন্দ্র ভক্তের সভাপতিত্বে অসম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ নির্মাণের স্লোগানে আয়োজিত সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কানুতোষ মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রানা দাশগুপ্ত, মানবাধিকার কর্মী সালাম আজাদ প্রমুখ।