দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
শুক্রবার রাতে রাজধানীর রেডিসন হোটেলে ‘এইচএসবিসি এক্সপোর্ট একসিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি বাড়ানোর অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রপ্তানি খাতে পণ্য বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার সম্প্রসারণ ধীর গতিতে হচ্ছে। এটা দ্রুত হওয়া দরকার। তবে পাট, চামড়া, ফার্নিচার খাত রপ্তানিতে ভালো করছে। জাহাজ নির্মাণ শিল্পও এগিয়ে যাচ্ছে।’
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, এদেশের নারী শ্রমিকরা প্রচুর পরিশ্রম করেন, ভালো পণ্য তৈরি করেন। তাদের চাহিদা খুব কম। সুতরাং তাদের এই চাহিদার দিকে উদ্যোক্তাদের নজর দিতে হবে।
এবার ‘এইচএসবিসি এক্সপোর্ট একসিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১১’ পেয়েছে দেশের ছয়টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। পাঁচ ক্যাটাগরিতে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
এবারের অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো- তৈরি পোশাক শিল্প ও বস্ত্র (বার্ষিক রপ্তানি আয় ৫০ মিলিয়ন ডলার বা এর বেশি) ক্যাটাগরিতে ‘জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিকস লিমিটেড’, তৈরি পোশাক শিল্প ও বস্ত্র (বার্ষিক রপ্তানি আয় ৫০ মিলিয়ন ডলারের কম) ক্যাটাগরিতে ‘উর্মি গ্রুপ’, বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (ইপিজেড) অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে ‘কোয়ালিটেক্স গ্রুপ’, সনাতন ও উদীয়মান ক্যাটাগরিতে (বার্ষিক রপ্তানি আয় ৩ মিলিয়ন ডলার বা এর বেশি) যৌথভাবে বিজয়ী ‘প্রাণ গ্রুপ’ ও ‘জনতা জুট মিলস লিমিটেড’ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে (বার্ষিক রপ্তানি আয় ৩ মিলিয়ন ডলারের কম) ‘বে ফুটওয়্যার লিমিটেড’।
অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমুহের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আমজাদ খান চৌধুরী, বে ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউর রহমান, জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফ্রেবিকস লিমিটেডের পরিচালক আসিফ আশরাফ, জনতা জুট মিলের প্রতিনিধি সাঈদ উজ জামান ও কোয়ালিটেক্স গ্রুপের প্রতিনিধির হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এইচএসবিসি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের এইচএসবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকিংয়ের প্রধান নোয়েল পি কুইন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনেতিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এর কারণ সরকার যথাসময়ে রপ্তানিকারকদের সঠিক সুবিধা দিয়েছে।
নোয়েল পি কুইন বলেন, ‘আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি খাতে আরও এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, এশিয়ার প্রধান ২০টি বাজারের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এখন দরকার উদ্যোক্তাদের জন্য মূলধন’।
এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী অ্যান্ড্রু টিল্ক বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন তাদের স্বীকৃতি দিতে পেরে আমরা গর্বিত।
তিনি বলেন, ‘শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক ব্যাংক হিসেবে এইচএসবিসি বাংলাদেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসমূহকে বিশ্বমানের সেবা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ।’