দুই যুগ পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন

দুই যুগ পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন

চলতি বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসু নির্বাচন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এবছরের মার্চের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দুই যুগেরও বেশি সময় পর অবশেষে ডাকসু নির্বাচন পুনরায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

তবে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব হলে সহাবস্থান নিশ্চিত ও ক্যাম্পাসে রাজনীতির সমান সুযোগ সৃষ্টিসহ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান থাকলেও ১৯৯০ সালের পর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। গত ২৮ বছর ধরে কার্যত অচল হয়ে থাকা এই সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সচল হতে চলছে, এই খবরে খুশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের পরে এই প্রথমবার হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। আমরা সবাই উল্লাসের মাঝে আছি, ডাকসু নির্বাচনটা আসলেই দরকার। এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের প্ল্যাটফরম তৈরি হবে। আমরা আমাদের অধিকারগুলো বলতে পারবো।

চলতি বছরের মার্চের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের খসড়া ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ডাকসুর গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করতে ছাত্র সংগঠনগুলোর বিভিন্ন প্রস্তাবনাও ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ডাকসু গঠনতন্ত্র সংশোধনের প্রস্তাবনা
১. বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করা।

২. উপাচার্য এককভাবে প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ করতে পারবেন না।

৩. ডাকসুর কাঠামোতে পর্যাপ্ত নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

৪. কাঠামোতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক, গবেষণাবিষয়ক ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদ সৃষ্টি করা।

৫. এবারের ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে হলে না করে একাডেমি ভবনে রাখা।

প্রস্তাবনায় হলগুলোতে সব সংগঠনের শিক্ষার্থীদের সহাবস্থান নিশ্চিত করা, ডাকসুর সভাপতি বা উপাচার্যের ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার দাবি জানানো হয়। এছাড়া ডাকসুর কাঠামোতে পর্যাপ্ত নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা ও বাংলা ভাষায় ডাকসুর গঠনতন্ত্র প্রণয়ন সহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজিব দাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো যেহেতু ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের দখলে, নির্বাচনটা যদি হলে অনুষ্ঠিত হয় তাহলে ছাত্রদের মধ্যে একটা আতংক বিরাজ করবে এবং ভোট প্রদানের যে অধিকার তা তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে বলে আমরা মনে করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম জাকিউল ইসলাম শাহীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম নির্বিঘে চালাতে পারি তার একটা পরিবেশ করে দেওয়া হক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, যারা যে হলের শিক্ষার্থী তারা যদি সে হলে থাকতে কোথাও বাঁধা পায় সেক্ষেত্রে হল প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে দ্রুত তফসিল ঘোষণাসহ সব কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

শীর্ষ খবর