খালেদা জিয়াসহ আসামীদের বিরদ্ধে চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট মামলার রায় ২৯ অক্টোবর

খালেদা জিয়াসহ আসামীদের বিরদ্ধে চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট মামলার রায় ২৯ অক্টোবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ চার আসামীর বিরুদ্ধে আনা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২৯ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ওই তারিখ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন বহাল থাকবে বলেও আদেশ দিয়েছে আদালত।
রাজধানীর ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর স্থাপিত পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান আজ এ আদেশ দেয়।
আদালতের আদেশে বলা হয়, ‘গত আড়াই বছর ধরে এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির দিন দেয়া হয়েছে। কিন্তু বারবার সময় দেয়ার পরও আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক শুনানিতে অংশ নেননি। তাই বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২৯ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হলো।’ আদেশে আরও বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলবে এবং এ মামলার রায় ঘোষণার দিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া জামিনে থাকবেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বারবার সময় আবেদন করে কালক্ষেপণ করেছে। তারা বিচারিক কোনো কাজে অংশ নেন না কিন্তু জামিন বাড়ানোর সময় হলেই তারা জামিনের আবেদন করেন।’
এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না এবং মামলার কার্যক্রম সমাপ্ত করে কেন রায় ঘোষণা করা হবে না- তার ব্যাখ্যা চেয়ে আদেশের জন্য আজ মঙ্গলবার দিন ধার্য ছিল। এছাড়া মামলাটির রায়ের তারিখ ঘোষণা বিষয়ে দুদকের আবেদনের ওপরও আদেশের দিন ধার্য ছিল আজ।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলার আদেশের জন্য গত ১৪ অক্টোবর সময়ের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করে আজ ১৬ অক্টোবর আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও জামিন বাতিল, রায়ের তারিখ নির্ধারণের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করে দেয়। উল্লেখ্য-ওইদিনই হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার রিভিশন আবেদন খারিজ করে আদেশ দেয়। ফলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারের আদেশ বহাল থাকে।
এ মামলায় চার আসামির মধ্যে খালেদা জিয়া, জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান বর্তমানে কারাগারে আছেন। আরেক আসামি হারিছ চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হয়ে কারাবন্দি রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ মামলায় রায় দেয় বিচারিক আদালত। ওইদিন থেকেই কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া। এখন উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ি কারা হেফাজতে বিএসএমএমইউ’তে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুদকের পক্ষে আইনজীবী আদালতে একটি আবেদন পেশ করে জানান, যেহেতু আসামীপক্ষ শুনানি করতে আগ্রহী নয়, তাই মামলাটির রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হোক। এর আগে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে কি-না, এ বিষয়ে সেদিন মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে ২০ সেপ্টেম্বর আদেশ দেয় আদালত। আদেশে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে মামলা চলবে বলে বলা দেয়া হয়। এ আদেশ হাইকোর্টেও বহাল থাকে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে ৩২ জন সাক্ষ্য দেয়। আসামীপক্ষ তাদের জেরা করে।

আইন আদালত