বাংলাদেশের সম্পদের ওপর অনেকেরই চোখ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “অতীতে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। বাংলাদেশের সম্পদের ওপর অনেকের চোখ রয়েছে। তবে বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।“
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দুপুরে গণভবনে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।
ঘূর্ণিঝড়-আইলাসহ প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের পদক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের সৃষ্ট দুর্যোগ হোক বা প্রকৃতিক দুর্যোগ হোক যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষমতা রাখে আওয়ামী লীগ।’
তিনি বলেন, ‘মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষমতা ইনশাল্লাহ আওয়ামী লীগ রাখে।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে আর কেউ যাতে ক্ষমতা দখল করতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।’
মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিজয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে মামলার যে রায় তা বাংলাদেশের পক্ষেই যাবে।“
তিনি বলেন, “আপনারা আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে চান কি চান না সে সিদ্ধান্ত আপনাদের। কারণ জনগণ সব ক্ষমতার উৎস।“
বিএনপি শাসনামলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় আসা মানে মানবাধিকার লঙ্ঘন, লুটপাট, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, জঙ্গিবাদ আর দুর্নীতি বেড়ে যাওয়া।“
তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া ক্ষমতায় গিয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন। তার ছেলেরা মানি লন্ডারিং করেছেন। একজন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে মানি লন্ডারিং করে ধরা পড়ে, এর চেয়ে লজ্জার আর কি আছে।“
তারা ক্ষমতায় থাকতে দেশের পরিস্থিতি এমন খারাপ জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল যে সেনাবাহিনী নামিয়ে অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে মানুষ হত্যা করে। এরপর, এই হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার যাতে না হয়, সেজন্য ইনডেমনিটি দেওয়া হয়। এরপর তারা র্যাব গঠন করে ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা করে। এভাবেই তারা ক্ষমতায় টিকে ছিল।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তো বিরোধী দল ছিলো না, তারা কেন উন্নয়ন করেনি। তারা কেন বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি?“
তিনি বলেন, “একটি দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যে দল যুক্ত থাকে, যারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে সে দল ক্ষমতায় থাকলেই প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব।“
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল দেশের উন্নয়ন করতে পারে না। ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতায় বসেছে, এ কারণে উন্নয়ন হয় না।“
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “নিজে কি পেলাম সেটা বড় কথা না। নিজে পাওয়ার চিন্তা না করে মানুষ কি পেলো সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।“
এ সময়, সরকারের সফল্য জনগণের মাঝে তুলে ধরারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘গণভবনে’ অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপ-নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সতীশ চন্দ্র রায়, ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান, খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজ্জাম্মেল হক প্রমুখ।