উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন ধরে রাখতে দুর্নীতিকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের ঐতিহাসিক সাফল্য জাতীয় পর্যায়ে উদযাপনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় গণযোগাযোগ অধিদফতরের ৬৪টি জেলা অফিস ও চারটি উপজেলা তথ্য অফিসে একই সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন হয়। বাংলাদেশের অর্জন ধরে রাখতে তিনটি চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, একটি হচ্ছে দুর্নীতি। আগে যে দুর্নীতিতে হ্যাট্রিকের নজির আছে, তা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। দুর্নীতি দূর করার ক্ষেত্রে সরকার উন্নতি করতে পেরেছে। সবক্ষেত্রে যদি জিরো টলারেন্স দেখিয়ে সমূলে দুর্নীতি উৎপাটন করতে পারি তবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। তদারকির অভাবকে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাঠ পর্যায়ে আমাদের তাদরিক জোরদার করতে হবে।
এছাড়া সরকারের অর্জনকে গণমাধ্যমের মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরাও আরেকটি চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তারানা হালিম। তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের অংশীদার জনগণ। তাদের কাছে আমরা এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। এজন্য আমরা নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বর্তমান সরকার বেশির ভাগ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পেরেছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়াটাও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার একটা দৃষ্টান্ত।
সবার সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত, যথোপযুক্ত পলিসি নির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও রাজনৈতিক অঙ্গীকারের কারণে বাংলাদেশের এই সাফল্য এসেছে বলেও দাবি করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী। বর্তমান সরকার ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকার কারণে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে তারানা হালিম বলেন, ‘আগামীতে সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। আমাদের ২০০৫-০৬ সালের স্থবিরতা থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে।’
উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতিতে প্রচার-প্রচারণায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের কত টাকা ব্যয় হচ্ছে, জানতে চাইলে তারানা তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাড়তি কোন খরচ নেই। সরকারের তথ্য কর্মকর্তারা প্রচার-প্রচারণার এই কাজটিই করে থাকে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে আমরা কৃপণতা অবলম্বন করে থাকি। আমরা শ্রমটা বেশি দিয়ে থাকি।’
তারানা হালিম জানান, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতে যে তিনটি সূচক রয়েছে, সবগুলো সূচকেই বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। জাতিসংঘের মানদণ্ড অনুযায়ী মাথাপিছু আয় এক হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার হলেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৬১০ ডলার। মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচক মানদণ্ড অনুযায়ী, ৬৬ বা এর বেশি হলে বাংলাদেশের সূচক ৭২ দশমিক ৯ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের মানদণ্ড ৩২ বা এর কম, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সূচক ২৪ দশমিক ৩। এছাড়া তথ্য প্রতিমন্ত্রী খাদ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ, রিজার্ভসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
এ সময় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুয়াল হোসেন, গণযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।