ভারতের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উদ্ভাবন

ভারতের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উদ্ভাবন

আকাশ পথে সম্ভাব্য যে কোনো আক্রমণ থেকে ভারতের বড় বড় নগরীগুলো এখন সুরক্ষিত, এমনটাই দাবি করছে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেসন(ডিআরডিও)। ভারতের ‘মিসাইল ডিফেন্স সিল্ড’ বা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন‍ভাবে হাল নাগাদ করা হয়েছে জানিয়ে সংস্থাটি দাবি করছে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে কমপক্ষে দুইটি বড় নগরীকে শত্রুর নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে নিরাপদ রাখা সম্ভব।

ডিআরডিও জানিয়েছে, নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারীতা সংক্রান্ত সকল পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নতুন ‘মিসাইল ডিফেন্ড সিল্ড’ ২ হাজার কিলোমিটার পরিসীমার মধ্যে যে কোনো ক্ষেপণাস্ত্রকে বায়ুমন্ডলেই ধ্বংস করতে সক্ষম বলে দাবি করেছে তাদের বিজ্ঞানীরা। এর সক্ষমতা আরো বৃদ্ধির কাজ এখনও অব্যাহত আছে জানিয়ে ডিআরডিও আশা করছে আগামী ২০১৬ সালের মধ্যে এই পরিসীমা ৫ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত হবে।

পরীক্ষা চলাকালে আক্রমণকারী ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে পৃথ্বী মডেলের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয় বলে জানায় ‍তারা।

এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল’ সমৃদ্ধ ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তিকে আরো বাড়িয়ে দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে ডিআরডিও। বর্তমান পৃথিবীতে খুব অল্প সংখ্যক দেশেরই নিজেদের স্বউদ্ভাবিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ডিআরডিও প্রধান ভিকে সারস্বতের বলেন,‘ নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এ মুহূর্তে সম্পূর্ণ কার্যকর। আমরা এখন এটি স্থাপনের জন্য প্রস্তত।’

প্রাথমিকভাবে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার অধীনে একই সঙ্গে দুটি শহরকে সুরক্ষা দেওয়ার সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও তিনি শহর দুটির নাম প্রকাশে অসম্মতি জানিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে স্থান নির্বাচনের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলই নেবেন।

সারস্বত বলেন,‘আমরা ছয়টি সাফল্যজনক ‌উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছি। ২ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে যে কোনো ক্ষেপণাস্ত্রকে সফলভাবে প্রতিহত করার ক্ষমতাও প্রদর্শন করেছি। আমরা দুটি ধাপে এর পরীক্ষা চালিয়েছি, একটি ইনডো অ্যাটমসফেরিক বা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ভেতর এবং অপরটি এক্সো অ্যাটমসফেরিক বা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বাহিরে। উভয় পরীক্ষাই সফলভাবে সম্পন্ন  হয়েছে।’

নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি বর্তমানে দ্বিতীয় ধাপে উন্নয়নাধীন রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি প্রত্যাশা করেন আগামী ২০১৬ সালের মধ্যে এর উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন হবে।

শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সমৃদ্ধ এই প্রযুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্যাট্রিওট-৩ সিস্টেমের সমতুল্য বলে দাবি করেছে ডিআরডিও। ১৯৯০ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ইরাকের ছোড়া স্কাড ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে এটিকে সফলভাবে ব্যবহার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

আন্তর্জাতিক